নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা মোরগ লড়াই। এ মোরগ লড়াই বগুড়ায় আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে উপভোগ করল বৈশাখী মেলায় আগত উপচে পড়া দর্শকরা। বুধবার বিকেলে শহরের পৌর এ্যাডওয়ার্ক পার্কে ৪৩তম বৈশাখী মেলায় এ খেলার আয়োজন করে বগুড়া থিয়েটার।
বাংলার গ্রামগঞ্জের এক সময়ের জনপ্রিয় এ খেলা এখন বিলুপ্ত প্রায়। নতুন প্রজন্ম তো দেখেইনি। তাই বেশ উৎসাহ নিয়েই বিকেলে শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ উপস্থিত হয় মেলা প্রঙ্গণে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সাত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ দিনে আয়োজিত এই মোরগ লড়াইয়ে অংশ নেয় বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া এলাকার ৪টি লড়াকু মোরগ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী লড়াইয়ে প্রথমে একটি করে জুটি মোরগ মুখোমুখি হয় প্রতিপক্ষের। পর্যায়ক্রমে প্রাণপণে লড়তে থাকে মোরগগুলো। লড়াইয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতালির মাধ্যমে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন উপস্থিত দর্শকরা।
খেলা দেখতে আসা রাজ্জাক হোসেন বলেন, জীবনে এই প্রথম মোরগ লড়াই সরাসরি দেখলাম। খুব আনন্দ পেয়েছি। এজন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।
দর্শক নাজমুল হাসান বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা মোরগ লড়াই আর দেখাই যায় না। মোরগ লড়াই খেলা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। দীর্ঘদিন পর বগুড়া পৌর পার্কে আয়োজিত বৈশাখী মেলায় মোরগ লড়াই দেখলাম। মোরগ লড়াই দেখে খুব ভালো লাগল।
মুত্তালিব হোসেন নামে এক প্রবীণ দর্শক বলেন, ছোটবেলা গ্রামে মোরগ লড়াই দেখেছি। সেসময় বেশ উৎসাহ আর উদ্দীপনা ছিল। বলা যায়, এসব খেলা আমাদের প্রাণের খেলা। আজ আমরা অনেক খেলাই হারিয়ে ফেলেছি। এমন উদ্যোগে হয়তো খেলাগুলো আবার ফিরে আসবে।
খায়রুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার এ বৈশাখী মেলায় মন্ত তন্ত সাপ খেলা দেখেছি, অনেক ভালো লেগেছে। তাই আজ আমার দুই সন্তানকে মেলায় নিয়ে এসেছি। তাদেরকে নিয়ে মোরগ লড়াই দেখলাম। এ মোরগ লড়াই দেখে আমার সন্তানরা খুবই খুশি ও আনন্দিত হয়েছে।
বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না বলেন, বৈশাখী মেলায় নতুন প্রজন্মের সামনে বিলুপ্ত প্রায় খেলাগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে। নিজেদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতি উদ্ধার ও লালনে যেন মনোযোগী হয়ে ওঠে নতুন প্রজন্ম। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহনকারী এসব খেলা হারিয়ে ফেলতে বসেছি আমরা। মূলত এ ভাবনা থেকেই জনপ্রিয় গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন। এমন আয়োজন প্রতি বছরই করে থাকে বগুড়া থিয়েটার। মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের লাঠি খেলা, পাতা খেলা, সাপ খেলারও আয়োজন করা হয়। আগামী দিনও এসব ধারা অব্যাহত থাকবে।
Posted ২:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin